রাষ্ট্রীয় সংখ্যালঘু বঞ্চনার মুক্তির পথ কত দূর | How far is the path to freedom from state minority deprivation
![]() |
Persecution of minorities by the state |
গত ১৩ই অক্টোবর ২০২২ ইং তারিখে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সাধারণ ও সংস্থাপন শাখার অফিস আদেশ নং ৩০২/২২( এ এন্ড সি)। সেখানে কর্মরত ধর্মীয় সংখ্যালঘু ব্যক্তি পূজন কুমার চৌহান ২০১৩ সাল থেকে চাকরি করছেন একজন সংখ্যালঘু হিসেবে। কি এমন হলো যে, ১০ বছর পর ২০২২ সালে তাকে ধর্ম পরিবর্তন করে নাম পরিবর্তন করতে হলো। তার নাম পূজন কুমার চৌহানের পরিবর্তে মোহাম্মদ রাজীব আহমেদ করতে হলো এবং বাংলাদেশের একটি সর্বোচ্চ বিচার বিভাগীয় প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞাপন দিয়ে তা করলো এবং সরাসরি সমর্থন করলো সংখ্যালঘু ধর্মান্তরকরণ।
এর ফলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সকল আইনজীবি এবং কর্মচারীরের প্রতি একটি বার্তাও গেল যে তুমি সংখ্যালঘু তোমার অধিকার রক্ষা দুরে থাক রাষ্ট্রের সংবিধানে স্বীকৃত Majority people এর ধর্ম তোমাকে গ্রহন করতে হবে, যদি তুমি এই ভুখন্ডে থাকো।
আবার আমরা দেখতে পাই, আমাদের মাননীয় প্রধান বিচারপতি গত ১৭ অক্টোবর, ২০২২ইং তারিখে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে এক আলোচনা অনুষ্ঠান বিবৃতি দেন সংখ্যালঘুদের উদ্দেশ্য করে। যা ‘হযরত মুহাম্মদ (সা.) এবং একটি মানবিক বিশ্ব’ শীর্ষক আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল নামে অনুষ্ঠানটি ছিল। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি আয়োজন করে। সে অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশের হিন্দু সম্প্রদায় কেন নিজেদের সংখালঘু ভাবে সে প্রশ্ন রেখে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আরোও বলেছেন, ‘আমার মনে হয় এটা তাদের (হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের) ইনফিরিওর কমপ্লেক্সিটি (হীনমন্যতা) ’ এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় পুজন চৌহানকে হাইকোট বিভাগে ধর্মান্তর করার ৪ দিন পর। দেশের সরকার প্রধান থেকে মন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতিরা সংখ্যালঘুদের ইনফিরিওর কমপ্লেক্সিটি (হীনমন্যতা) এর গল্প শোনান।
কিন্তু তারা খবর রাখেন কীনা জানি না, তাদের প্রতিষ্ঠান ও পর্ষদ দ্বারা প্রতিদিন সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।
আরেকটি উদাহরণ ২০১২ সাল থেকে ২০২২ সাল অবধি যতগুলো Mass Attack হয়েছে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর তার একটারও বিচার হয়নি বা বিচারের জন্য সর্বোচ্চ আদালত থেকে সর্বনিম্ন আদালত পর্যন্ত গেলে কোন না কোন ভাবে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তাই রাষ্ট্র পরিচালনরার কর্তারা সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের বিচার করবে না যা গত দুই দশক ধরে আমরা দেখছি। তারা শুধু আমাদের উদ্দেশ্যে ছবক দিবেন, বিবৃতি দিবেন এতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। আর না হলে অস্তিত্ব রক্ষায় সংখ্যালঘুদের নতুন করে ভাবতে হবে। নতুন সংগ্রামের পথ বেছে নিতে হবে। দেশের প্রতিটি নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের সাথে নিয়ে নতুনভাবে রাস্তায় নামতে হবে অথবা বিলুপ্তির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।