Translate

বাঙালি_হিন্দুদের নিয়ে কাজ করা, আর মান্দারগাছে পিঠ ঘষা একই!

 বাঙালি_হিন্দুদের নিয়ে কাজ করা, আর মান্দারগাছে পিঠ ঘষা একই! 


বাঙালি হিন্দুরা হল এমন একটি সম্প্রদায় যাদের ইতিহাস বিস্মৃত জাতিদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বলা চলে।এ ইতিহাস বিস্মৃতির কারণে তারা বিভিন্ন সময়ে অসংখ্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর কারণে জাতিগতভাবে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নেয়ায়, একই ভুলের পুনরাবৃত্তি তারা পূর্বেও করেছে আজও করে চলছে। বিনাশেও যাদের বুদ্ধি হয় না, তাদেরই আরেক নাম বাঙালি তথাকথিত সেকুলার হিন্দু। এরা যদি বাঙালি মুসলিম থেকে কিছুটা হলেও শিক্ষা নিতে পারতো তবে তারা জাতিগতভাবে হয়ত কিছুটা হলেও সুরক্ষিত হতে পারতো।


Hinন্দু দের জন্য কিছু করে কি কখনো কিছু হবে? এরা নিজেরাই নিজে বাঁচতে চায় না তবে আমরা রাত দন পরিশ্রম করে কি করবো কে জানে। দিন দিন এই Hinন্দুদের জন্য কাজ করে বাবা,মা, ভাই,বইন,বন্ধু,বন্ধঅব থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছি। শুধু মাত্র hinন্দুদের জন্য কাজ করে।

আর আজ তারা নাকি যাবে "আজমীর শরীফ" এ।  যেখানে কিনা ৭০০বছর আগে "খাজা নাজিমউদ্দিন চশতী" Hinন্দুদের গনহারে হ-ত্যা করে মাজার বানায়। আর এই Hinন্দুরাই কিনা আজ সেটাকে তীর্থস্থানের উপাধী দিয়ে বসলো। তো hinন্দুদের মন্দির প্রতিমা ভাঙ্গবে নাতো কি পূজো দেবে নাকি?



#History:
দিল্লী এবং আজমির মুহম্মদ ঘুরির দখলে আসার পরে একের পর এক রাজ্যের পতনের পালা শুরু। কনৌজের রাজা জয়চাঁদ রাঠোরের সাথে পৃথ্বীরাজ চৌহানের শত্রুতা ছিল। মুহম্মদ ঘুরি যখন পৃথ্বীরাজ চৌহানকে হত্যা করে তখন জয়চাঁদ রাঠোর উল্লাস প্রকাশ করেছিল। এখানে উল্লেখ্য পৃথ্বীরাজ চৌহান ছিল জয়চাঁদ রাঠোরের জামাতা। কিন্তু অপরিণামদর্শী রাজনীতি চিন্তার জয়চাঁদ রাঠোর চিন্তাও করতে পারেনই তার কন্যা ইতিমধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়ে গেছে, জানতো না তার দিনও ঘনিয়ে আসছে। ১১৯৪ সালে ঘুরি কনৌজ আক্রমণ করে এবং চান্দাবারের যুদ্ধে জয়চাঁদ রাঠোরকে হত্যা করে। কনৌজ জয় করে মুহম্মদ ঘুরি কুতুবউদ্দিন আইবেকের কাছে শাসনভার অর্পণ করে খোরাসান রণক্ষেত্রে চলে যায় বিদ্রোহ দমন করতে। কুতুবউদ্দিন আইবেক পুরো ভারত জুড়ে তাণ্ডব চালিয়ে যেতে থাকে।


ফ্রান্সের সাংবাদিক Francois Gautier তার ‘Rewriting Indian History’ (1996) বইতে লিখেছেন, “মুসলিমদের তরোয়ালের আঘাতে দীর্ঘমেয়াদী চলমান ভারতের হিন্দু গণহত্যায় ঘুরির নেতৃত্বে আফগান, তুর্কি সেনাবাহিনীর হাতে সংঘটিত হয় ইতিহাসের ঘৃণ্যতম গণহত্যা যার কোন তুলনা হয় না। ঘুরির নেতৃত্বে প্রকৃতপক্ষে কী পরিমাণ হিন্দু জনসংখ্যা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে তার সঠিক পরিমাণ কোনদিন জানা সম্ভব হবে না। কারণ মুসলিম শাসকরা হিন্দু গণহত্যার ইতিহাস হিন্দুদের লাশের সাথেই নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। তবে গণহত্যা শুধু মানুষ হত্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং হিন্দুদেরকে গণ-ধর্মান্তরকরণ, মন্দির ধ্বংস, মন্দিরের মূর্তি বিনষ্ট, লুটপাট, ধর্ষণের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে তাদেরকে যেতে হয়েছে। মুসলিম-বাহিনী মন্দির লুটে নিয়ে, মন্দির ধ্বংস করে দিয়ে প্রথমেই ব্রাহ্মণ পণ্ডিতদের হত্যা করত, তাদের স্ত্রী, কন্যাদের ধর্ষণ করে হারেমে পাঠিয়ে দিত বা দাস হিসেবে বেচে দিতো। রাজা, অমাত্য, মন্ত্রী, যুবরাজদের হত্যা করত সবার পরে। কিছু যুবরাজকে হত্যা না করে তাদেরকে খোজা করে দিয়ে হারেমের পাহারায় নিযুক্ত করত। বিশাল-সংখ্যক নারী সম্ভ্রম রক্ষা করতে বা যৌন-দাসী হওয়ার ভয়ে বিষপানে বা আগুনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল।
.
.

মুহম্মদ ঘুরির সাফল্যের পিছনে খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর ভূমিকা: মুহম্মদ ঘুরির বিজয়ের পিছনে তার দক্ষ সেনাবাহিনী, রণকৌশল ছাড়াও সূফী সাধক খাজা মইনুদ্দিন চিশতীর ভূমিকা অপরিসীম। মুহম্মদ ঘুরির আজমির আক্রমণের আগে থেকেই খাজা মইনুদ্দিন চিশতী সেখানে ইসলাম প্রচার করছিল। কিন্তু হিন্দু রাজার অধীনে তার ইসলাম প্রচার খুব বেশি সফল ছিল না। ফলে তার জন্য দরকার ছিল রাজশক্তির পৃষ্ঠপোষকতা। তাই কৌশলে আজমিরের ধন সম্পদের প্রাচুর্য, পৃথ্বীরাজ চৌহানের সুন্দরী স্ত্রী সংযুক্তার সৌন্দর্যের কথা ঘুরির কাছে উপস্থাপন করে। পৃথ্বীরাজ চৌহান, জয়চাঁদ রাঠোরের কন্যা সংযুক্তাকে স্বয়ম্বর সভা থেকে তুলে নিয়ে বিয়ে করে। ফলে রাঠোর এবং পৃথ্বীরাজের মাঝে শত্রুতা শুরু হয়। সেই শত্রুতাকে কাজে লাগায় খাজা মইনুদ্দিন চিশতী। চিশতী গুপ্তচরের মত গোপনে পৃথ্বীরাজের সৈন্যবল, শক্তিমত্তা, রণকৌশল, অস্ত্রসম্ভার ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ খবরাখবর জোগাড় করে ঘুরিকে নিয়মিত জানাতে থাকে। চিশতীর মাধ্যমে ঘুরি জানতে পারে রাজপুতরা সূর্যাস্তের পরে আর যুদ্ধ করে না। সুতরাং এটা আক্রমণের মোক্ষম সময়। স্যার যদুনাথ সরকার লিখেছেন, “চিশতীর পরামর্শেই শেষ রাতের আঁধারে ঘুরি ঘুমন্ত রাজপুত সেনাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। অপ্রস্তুত চৌহানের সেনাবাহিনী আকস্মিক আক্রমণে দিশেহারা হয়ে যায়। এদিকে মুহম্মদ ঘুরি পৃথ্বীরাজকে আক্রমণ করলে মইনুদ্দিন চিশতী রাজপুত-বাহিনীর পানির উৎসে বিষ মিশিয়ে দেয়”। বিজয়ীদের দ্বারা লিখিত ইতিহাসে খাজা মইনুদ্দিন চিশতীকে একজন ধর্মপ্রচারক সূফী এবং দার্শনিক হিসেবে মহিমান্বিত করা হলেও বাস্তবে স্থানীয় হিন্দুদের জন্য সে লালন করত অপরিসীম ঘৃণা। ইতিহাসবিদ এস.এস.এ রিজভি ‘A History of Sufism in India’, Vol. 1 (Munshiram Manoharlal, 1978)’ লিখেছেন, “খাজা মইনুদ্দিন চিশতী কিছু মুসলিম অনুসারী নিয়ে আজমিরের অন্নসাগর দীঘির পাড়ে আস্তানা গাড়ে। দীঘির চারপাশ ঘিরে বেশ কয়েকটি মন্দির অবস্থিত। সেখানে সে নিয়মিত গরু জবাই দিয়ে মাংস রান্না করে খাওয়ার পর মন্দিরের পবিত্রতা নষ্ট করার উদ্দেশ্যে গরুর হাড়, বর্জ্য ফেলে দিতো। আলী আজগর বিন শাইখ মাহমুদের “জওহর-ই-ফরিদি” বইতে উল্লেখ আছে, “হিন্দুদের পবিত্র গরু জবাইয়ের অভিযোগে পৃথ্বীরাজ খাজা মইনুদ্দিন চিশতীকে গ্রেফতারের জন্য সেনা পাঠালে সে কোনক্রমে পালিয়ে রক্ষা পায়। স্থানীয় হিন্দু নারীদের প্রতি তার যৌন লালসার কথা অবিদিত নয় কিন্তু ইসলামকে গৌরাবন্বিত করতে গিয়ে এবং ইসলামিক শাসকদের রক্তচক্ষুর ভয়ে সেসব কুকীর্তি চিরদিন থেকে গেছে লোকচক্ষুর অন্তরালে। মন্দিরের সেবায়ত নারীরা সেখানে স্নান করতে, জল আনতে গেলে খাজা মইনুদ্দিন চিশতী প্রায়ই তাদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। অন্নসাগর দীঘির পাড়ে কামদেবের মন্দিরে পুজো দিতে আসা পৃথ্বীরাজের অসাধারণ রূপসী স্ত্রী সংযুক্তাকে দেখে সে এতটাই কামার্ত হয়ে পড়ে যে নিজেকে সংবরণ করতে না পেরে তাকে ধর্ষণ করার ধৃষ্টতা পর্যন্ত দেখায়।” পৃথ্বীরাজ খাজা মইনুদ্দিন চিশতীকে শিরশ্ছেদের জন্য সৈন্য পাঠালে এবারেও সে অত্যন্ত ধূর্ততার সাথে আজমির থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। মূলত তখনই সে সংযুক্তার রূপ-যৌবনের প্রশংসা করে আজমির আক্রমণে প্রলুব্ধ করে মুহম্মদ ঘুরিকে চিঠি লেখে। সেই সাথে জানিয়ে দেয় আজমিরের বিপুল ধন সম্পত্তি ও পৃথ্বীরাজের রাজপ্রাসাদের অতুলনীয় নারীদের ভোগ করার সীমাহীন সম্ভাবনা।


.
.
মুহম্মদ ঘুরির সাফল্যের কারণ: ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ আর্নল্ড জোসেফ টয়েনবি A Study of History বইতে লিখেছেন, “মুহম্মদ ঘুরির সৈন্যদল গঠিত হয়েছিল ইন্দাস এবং অক্সাস নদীর মধ্যবর্তী অববাহিকার পার্বত্য অঞ্চলের বিভিন্ন আদিবাসী গোত্রের সমন্বয়ে যাদের জীবনযাত্রা ছিল সবসময় সংগ্রাম-মুখর এবং বিপদসংকুল। অন্যদিকে ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ ছিল শান্তিপ্রিয়, অপেক্ষাকৃত অলস ও বিলাসী, ফলে তারা স্বভাবতই যুদ্ধ-বিমুখ। তাদের যুদ্ধের কলাকৌশল আফগান বা তুর্কিদের মত উন্নত ছিল না। ভারতীয় উপমহাদেশ ছিল ছোট ছোট রাজ্যে বিভক্ত এবং তাদের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, আত্মকলহ নিত্যদিনের সঙ্গী। কোন রাজ্য আক্রান্ত হলে অন্য কেউ এগিয়ে আসত না।” যদিও যদুনাথ সরকার টয়েনবির বিরোধিতা করে বলেন, ভারতীয়দের যুদ্ধ কৌশল, বীরত্বের কোন ঘাটতি ছিল না। রাজপুত সম্প্রদায় তো অসীম সাহসী এবং যোদ্ধাজাতি ছিল। তবুও তাদের পতনের কারণ কী? যদুনাথ সরকারের মতে ভারতীয়দের সামাজিক কাঠামো তাদের ধ্বংস ডেকে এনেছে। আরব, আফগান, পাঠান অথবা তুর্কি যে জাতির সৈন্য হোক না কেন, দাস বা মালিক, ত্বকের রঙ যাই হোক না কেন ইসলাম তাদেরকে দিয়েছে সাম্যতা। তিনটি অনন্য কারণে ঘুরির সৈন্যদল পৃথ্বীরাজ বাহিনী থেকে আলাদা।
.
.
.
1.সকল মুসলিম ভাই ভাই। সেখানে কোন জাতিভেদ নাই, বর্ণপ্রথা নাই। যুদ্ধের ময়দানে সবাই সবার বিপদে আপদে এগিয়ে আসে। তাদের মাঝে সম্পর্কের বন্ধন সুদৃঢ়।
২. আল্লাহ এবং পরকালের উপর অটুট বিশ্বাস।
৩. ইসলামে মদ্যপানের উপর নিষেধাজ্ঞা মুসলিমদের বাঁচিয়ে দিয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। প্রবল প্রতাপশালী রাজপুত, মারাঠাদের যুদ্ধে হেরে যাওয়ার অন্যতম কারণ তাদের সুরাসক্তি।


ভারতীয় উপমহাদেশের সামাজিক এবং রাজনৈতিক কাঠামো, সমরনীতি তুর্কিদের যুদ্ধে জিতিয়ে দিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। ভারতের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্র রাজনৈতিকভাবে দুর্বল এবং সামন্ত রাজারা পারস্পারিক বিদ্বেষে এত মগ্ন ছিল যে বহিঃশত্রু পাশের রাষ্ট্র আক্রমণ করলে বরং তারা খুশি হতো। ছুতমার্গ ভারতের একটা ভয়াবহ সামাজিক ব্যধি। ছুতমার্গের কারণে একবর্ণের হিন্দু অন্য-বর্ণের হিন্দুদের সাথে মেলামেশা করতে পারত না, ফলে হিন্দুদের সেনাবাহিনীর দক্ষতা এবং একতা ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘুরি অন্যায়ভাবে রাতের আঁধারে আক্রমণ করলে অভুক্ত অবস্থায় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হয়। সকাল পর্যন্ত খাবার আসতে আসতে রাজপুত বাহিনী আগে জিজ্ঞেস করে, ব্রাহ্মণদের দ্বারা খাবার রান্না হয়েছিল কিনা। রাজপুত বাহিনী অসীম সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করলেও তারা ছিল রক্ষণশীল আর হাতিতে চড়ে তাদের গতিও ছিল অনেক ধীর। কিন্তু তুর্কি, আফগান বাহিনীর ঘোড়ায় চড়া গতি ছিল বিদ্যুতের বেগে। তুর্কি ও আফগান বাহিনীর যুদ্ধের নিয়মনীতি মেনে চলার দায় ছিল না, তারা আক্রমণকারী, অন্যায়ভাবে মানুষ মারতে তাদের দ্বিধা লাগে না, তাদের মৃত্যুর কোন ভয় নেই। যেকোনভাবে হোক শত্রুপক্ষের কেন্দ্রে গিয়ে আক্রমণ করা তাদের অন্যতম রণকৌশল। আজমির শহর ধ্বংস করা শেষ হতেই খাজা মইনুদ্দিন চিশতী দিলো সন্ধ্যার আযান। শব্দ লক্ষ্য করে ঘুরি আযানের উৎসে পৌঁছে গেল, সেখানে নামাজের জামাত প্রস্তুত। খাজা গরীবে নেওয়াজ মইনুদ্দিন চিশতীর ইমামতিতে মুহম্মদ ঘুরি দাঁড়িয়ে গেল মাগরিবের নামাজে।


Reference:
1. S.A. Rizvi in ‘A History of Sufism in India’, Vol. 1 (Munshiram Manoharlal, 1978)
2. Jawahar-i Faridi, written in 1033AH/1633 AD by Ali Asghar bin Shaikh Maudud of Fatehpur near Alllahabad, is another famous biographical work of the seventeenth century.
3. Medieval India: From Sultanat to the Mughals (1206–1526) by Satish Chandra .
4. A History of India By August Friedrich Rudolf Hoernle, Herbert Alick Stark
5. The Story of Civilization and The Case for India by Will Durant.
6. Rewriting Indian History (1996) by Francois Gautier
7. A Study of History by Arnold Joseph Toynbee




Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url