বাঘেরহাটে হিন্দুদের উপর 2টি আক্রমনের ঘটনা || কি হয়েছিলো ১১এপ্রিল ?
![]() |
ভয়ানক কালরাত |
গতকাল ১১এপ্রিল বাগেরহাটে সর্বজনীন দূর্গা মন্দিরে উগ্র মৌলবাদীরা মন্দিরে হামলা চালায়।
বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার শ্রীরামপুরে সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরে বাসন্তী পূজা চলাকালীন সময়ে সন্ধ্যার পর পাশের গ্রামের উগ্রমৌলবাদীরা এই মন্দিরে হামলা ও ভাংচুর চালায়।
মৌলবাদীদের হামলায় আক্রান্ত হওয়া সেখানকার সনাতনীদের ভাষ্যমতে,এই হামলার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। উগ্র মৌলবাদী তারেক ও লিমন এই হামলার পিছনের মাষ্টারমাইন্ড। পাশের গ্রাম বারাইসে থেকে তরিক ও লিমনের নেতৃত্বে আনুমানিক ৫০-১০০ জন উগ্র মৌলবাদী দেশীয় অস্ত্রসহ শ্রীরামপুরের সর্বজনীন দূর্গা মন্দিরে হামলা চালায়, এমনকি এই হামলার নেতৃত্বে থাকা দুইজনের মধ্যে একজন "লিমন" নামের উগ্রবাদী বলেছে যে,"২০০০০ টাকা দে নইলে পায়ের রগ কেটে দেবো"। এমনকি এরা সংঘবদ্ধভাবে এক সনাতনীর ঘরে ঢুকে তার জীবননাশ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে।
এছাড়া গতকালকেই আবারো বাগের হাটে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর আরেকটি হামলার ঘটনা ঘটে।
গতকাল বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার শ্রীরামপুরে সন্ধ্যার পরে দূর্গা মন্দিরে উগ্র মৌলবাদীদের সশস্ত্র হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই বাগেরহাটের অন্য জেলার মোড়লগঞ্জ উপজেলার আমড়বুনিয়া গ্রামের কৌশিক নামে এক হিন্দু ছেলের ফেসবুক স্ট্যাটাস কেন্দ্র করে মধ্য রাতে হিন্দু বাড়িতে শতাধিক উগ্র মৌলবাদীরা "নারায়ে তারবীর,আল্লাহু আকবর" বলে উগ্র স্লোগান দিয়ে অনেক হিন্দু বাড়ি-ঘরে আগুন অগ্নিসংযোগ করেছে, হিন্দু মহিলাদের নির্যাতন করেছে ও লুটপাট চালিয়েছে।
জানা গেছে, ভারতের একটি মেয়ে পোস্ট দেওয়ায় এই উগ্র মৌলবাদীর দল কৌশিক মিস্ত্রিকে (২০) সন্দেহ করে এবং ওর উপর আক্রমন করে। কৌশিক মিস্ত্রির ভাষ্যমতে ফেসবুকে কোন বাজে পোস্ট করে নাই। শুধুমাত্র সন্দেহের জেরে এতবড় ঘৃন্য হামলা চালিয়েছে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর ওই উগ্র মৌলবাদীরা।
কৌশিককে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মালেক গাজী ছেলে পিয়াস (২৮)। কৌশিক মিস্ত্রি বর্তমানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নিরাপদ আছেন।
ঘটনাস্থলে ১৩ নিশানবাড়ী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বাচ্চু ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। এছাড়াও কৌশিকদের ঘর বাড়ি ভাংচুর ও খড়ের গাদায় আগুন দিয়েছে উগ্রবাদিরা। নিঃস্ব হয়ে পড়েছে প্রতিটা হিন্দু পরিবার..
সবশেষে,এই হামলার ঘটনাগুলো সব পূর্বপরিকল্পিত। গত রক্তাক্ত শারদের মতো এই বাসন্তী পূজা উপলক্ষে অনেক আগে থেকেই এই সংখ্যালঘুর উপর হামলা,লুটপাটের নীল নকশা তৈরী করা হয়েছে।
উক্ত বিষয়গুলো নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, হিন্দুদের উপর যত সাম্প্রদায়িক হামলা হয় সবসময় রাষ্ট্র ও প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করে। যেখানে সুম্প্রিম কর্টই বিচারের কাজ খারিজ করে দেয় তখন বোঝাই যায় যে বিচারকার্যই মৌলবাদীদের পক্ষে। তাই নিজেরাই নিজেদের রক্ষা করতে হবে। নিজের মনোবলকে শক্তিশালী করুন, ওই উগ্র মৌলবাদীদের মিশিয়ে দাও মাটির সাথে। এই হোক স্লোগান।
দেশের সকল হিন্দুদের একটাই চাওয়া এই জঘণ্য ও ন্যাক্যারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ হোক। অবিলম্বে এই বর্ববোরোচিত ঘটনার সঠিক তদন্ত করে অপরাধীদের কঠিন বিচারের মুখোমুখি করা হোক, কিন্তু সবাই জানে এই পরপর দুটো সংখ্যালঘুর উপর হওয়া হামলার কোনো বিচার এইদেশে হবে না।