নোয়াখালীতে লক্ষ্মীর আরাধনা অক্ষুন্ন রয়েছে এরকম তিনজনের ব্যক্তির প্রতিবেদন | Noakhali massacre
❝ যে জাতির ইতিহাস নাই তাহার ভবিষ্যৎ নাই। ❞
শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
তাই বাঙ্গালী হি.ন্দুকে তার বিস্মৃত ইতিহাস স্মরণ করতে হবে। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে, যারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না, তাদেরকে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির মাশুল গুনতে হয়।
লক্ষ্মী পুজো পর্বে ১৯৪৬ সালের নোয়াখালী ও সংলগ্ন অঞ্চলে যে বহুদিন ব্যাপী ভয়ঙ্কর হত্যাকান্ডের কথা কমবেশি অনেকের জানা। কিন্তু এরমধ্যে অনেক বাঙ্গালী নিজেদের ভূমি, কয়েকহাজার বছরের সংস্কৃতি রক্ষার্থে লড়াই করেছেন। তাই হয়ত আজও নোয়াখালীতে লক্ষ্মীর আরাধনা অক্ষুন্ন রয়েছে এরকম তিনজনের ব্যক্তির প্রতিবেদন রইলঃ
স্থানঃ নোয়াখালী, বেঙ্গল, ব্রিটিশ ভারত
তারিখঃ অক্টোবর-নভেম্বর ১৯৪৬
লক্ষ্যঃ বাঙালি হিন্দু
হামলার ধরনঃ হত্যাযজ্ঞ, জোরপূর্বক ধর্মান্তর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, অপহরণ, ধর্ষণ
নিহতঃ ২৮৫,অন্যসূত্রে ৫০০০
হামলাকারী দলঃ মুসলিম ন্যাশনাল গার্ড, প্রাক্তন-সারভাইসম্যান, ব্যক্তিগত মিলিশিয়া
কারণঃ ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা
শ্রী কৃষ্ণমোহন রায়ঃ
নোয়াখালীর মাণিক্যনগরের বাসিন্দা কৃষ্ণমোহন রায়। ১৯৪৬ এর বিজয়া দশমীর পর থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ, রামগঞ্জে সনাতন বাঙ্গালী দের ওপর মৌলবাদী দের আক্রমণ হতে থাকে। লক্ষ্মীপুজো তে তা আর মারাত্মক আকার ধারণ করে। এমন অবস্থায় তিনি ও তাঁর সহযোগীরা বহুদিন বাড়ি ও এলাকায় রীতিমতো প্রতিদিন শস্ত্র হাতে প্রতিরোধে নেমে যান। এমনকি এই সময় তিনি বন্দুক দিয়ে উগ্রপন্থীদের হটিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন।
শ্রী রাজেন্দ্রলাল রায়চৌধুরীঃ
![]() |
রাজেন্দ্র লাল চৌধুরীর ধ্বংসপ্রাপ্ত বাসা। তিনি ছিলেন নোয়াখালী বারের চেয়ারম্যান এবং নোয়াখালী হিন্দু মহাসভার প্রেসিডেন্ট। |
নোয়াখালীর হত্যাকান্ডের অন্যতম প্রতিরোধ কারী ছিলেন রায়চৌধুরী মহাশয়। যিনি বীরের মতো লড়ে প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন। ৪৬ সালের ১০ ও ১১ ই অক্টোবর তিনি তাঁর রাইফেল নিয়ে স্থির ভাবে মৌলবাদী দের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তিনি ভারত সেবা সঙ্ঘের স্বামী ত্র্যম্বকানন্দ কেও ওই পর্বে নিরাপত্তা দেন। তবে ১২ ই অক্টোবর ওই অঞ্চলের উগ্রপন্থী গোষ্ঠী আরও বড় আকারে অস্ত্র সহকারে রায়চৌধুরি বাড়িতে আক্রমণ করলে তাঁদের সকলের মৃত্যু হয়।
শ্রী চিত্তরঞ্জন দত্ত রায়চৌধুরীঃ
ইনি আরেকজন আত্মত্যাগী বাঙ্গালী বীর। যিনি কলকাতার নিরাপদ কর্মস্থল ছেড়ে ১৯৪৬ ছেড়ে বাংলাদেশের শায়েস্তানগরের বসত বাড়ি তে নিজের সংস্কৃতি রক্ষার্থে মায়ের আহ্বানে চলে যান। ১০ অক্টোবর স্থানীয় উগ্রপন্থী দের বিরুদ্ধে বাড়ির ছাদ থেকে রাইফেলের নিয়ে লড়াইয়ে নামেন। কিন্তু বৃহৎ আকারের সশস্ত্রতার কাছে না পেরে শেষমেষ নিজেই তিনি নিজের ও পরিবারের প্রাণ বিসর্জন দেন ।
১৯৪৬ এর পূর্ববঙ্গ অধুনা বাংলাদেশের লক্ষ্মী পুজো নোয়াখালী ও তৎসংলগ্ন স্থানে সংখ্যালঘু বাঙ্গালী দের সনাতনী সংস্কৃতি ও জীবনে যে নির্মমতার এসেছে, তা অকল্পনীয়। সেই অবস্থাতেও যেভাবে বুক চিতিয়ে বহু বীর বাঙ্গালী রা প্রাণ ঝুঁকি নিয়ে লড়ে গেছেন তা কখনও ভোলার নয়। এই আত্মত্যাগের ফল হয়ত নোয়াখালী তে আজও বাঙ্গালী সংখ্যালঘু হওয়া সত্বেও লক্ষ্মী উপাসনা হয়ে চলেছে।
তথ্যসূত্র -
সাতচল্লিশের ডাইরী - নির্মল কুমার
Written by Bibhu Paul
- হিন্দুদের ওপরে ঘটে যাওয়া দাঙ্গার ইতিহাস ও ভূমিকা | History and role of riots against Hindus
- লীলা রায় ১৯৪৬ সালে নোয়াখালী দাঙ্গায়, তিনি একাই ১৩০৭ জন হিন্দু মেয়েকে উদ্ধার করেন
- দুই বাংলার তথাকথিত মুক্তমনা মানুষের কাছে সদা উপেক্ষিত এক বৃহৎ হত্যাযজ্ঞ
- ভয়ঙ্কর লক্ষ্মীপূজো (নোয়াখালি দাঙ্গা ) ১৯৪৬ | Terrible Lakshmi Puja (Noakhali Riots) 1946
- ১৯৫০ সালে পূর্ববঙ্গ থেকে ১ মাসে ৫০ লক্ষ হিন্দু বিতাড়নের নৃশংস ইতিহাস | হিন্দু গণহত্যা | History | Hindu expulsion
ঐ রকম নারকীয় ঘটনা হিন্দু বাঙালি ভুলবে না, শুধু সময়ের অপেক্ষা, ইহুদিদের মতোন 1000বছর পরে হলেও, প্রতিশোধ নেওয়া হবে, 7/8শত বছর ইসলামী রাজদন্ড, অত্যাচার চালিয়ে যখন হিন্দুর বিলোপ করতে পারেনি, এখন সেটা কল্পনা, বর্তমানের আন্তর্জাতিক পরিবেশও পরিস্থিতি বলছে, হিন্দুই করবে, ইসলামের বিনাশ, কেবল, বঙ্গের হিন্দু গনহত্যা, দেশত্যাগে বাধ্য করার রাগটা অন্তরে জ্বালিয়ে রাখতেহবে, নিভতে দিলে চলবে না