Translate

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে মাদ্রাসায় বোমা হামলা, নিহত ১৭ জন

জোহরের নামাজের সময় আইবাক শহরের আল-জিহাদ মাদরাসায় এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের সামানগান প্রদেশের একটি মাদরাসায় বোমা বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১৭ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছে। হতাহতদের বেশিরভাগই ছাত্র। তাদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে। নিহতের সংখ্যা বাড়তেও পারে।

সামানগান প্রদেশের রাজধানী আয়বাকের একটি মাদ্রাসায় বহু শিক্ষার্থী দুপুরে জোহরের নামাজ পড়ার জন্য জড়ো হলে এই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বলা হচ্ছে নামাজ শেষে লোকজন যখন বের হয়ে যাচ্ছিল তখনই এই বিস্ফোরণ ঘটেছে।


স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, আজ (বুধবার) জোহরের নামাজের সময় আইবাক শহরের আল-জিহাদ মাদরাসায় এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

সামানগান প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র এমদাদুল্লাহ মুহাজির জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ১টার দিকে আইবাক শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত জাহদিয়া মাদ্রাসার ভেতরে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছিল। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এই ঘটনার দায় কেউ স্বীকার করেনি। হামলার বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে।

কেউ কেউ বলছেন, এটি ছিল আত্মঘাতী হামলা। তবে এখন পর্যন্ত আফগান কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি। তাৎক্ষনিকভাবে কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে এর আগে এ ধরণের একাধিক হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশ বা আইএস।


তালেবান বাহিনী এ ঘটনা তদন্ত করে দেখছে এবং ‘দোষীদের খুঁজে বের করে তাদের অপরাধের জন্য শাস্তি দেয়ার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে জানায় বিবিসি। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই টুইটারে এক পোস্টে এ বিস্ফোরণকে ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ বলে বর্ণনা করে হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।


গত বছর যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সরকারকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করে পুনরায় আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। তারপর থেকে দেশটিতে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। যেগুলোর বেশিরভাগের দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) স্থানীয় শাখা। যারা ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রভিন্স (আইএসআইএস-কে) নামে পরিচিত।

আফগানিস্তানের সবচেয়ে চরমপন্থি জঙ্গি দলটি দেশটির ধর্মীয় সংখ্যালঘু বিশেষ করে শিয়া হাজারা সম্প্রদায়ের মানুষদের তাদের হামলার মূল লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। তাদের রক্ষা করতে ‘তালেবান কর্তৃপক্ষ খুব সামান্য ব্যবস্থাই গ্রহণ করেছে’ বলে দাবি ‍হিউম্যান রাইটর্স ওয়াচের।

এছাড়াও, সংখ্যালঘু দমনের ক্ষেত্রে তালেবান প্রশাসনের মৌন সম্মতি আছে বলে অভিযোগ অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলোর। গত সেপ্টেম্বর মাসে রাজধানী কাবুলে আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ৫৪ জন নিহত হয়। যাদের মধ্যে ৫১ জনই তরুণী ছিল। হামলাকারী একটি হলকে তার হামলার লক্ষ্যবস্তু করেছিল। যেখানে কয়েকশ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য পরীক্ষা দিচ্ছিল।

তালেবান নেতারা পরে ওই হামলার জন্য আইএসআইএস-কে জঙ্গি দলের নিন্দা জানায়। যদিও তারা হামলার দায় স্বীকার করেনি।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url