Translate

The Kerala Story সিনেমা একটি ধর্মের নির্মম বিধানের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয় | The Kerala Story Movie Review

The Kerala Story সিনেমা একটি ধর্মের নির্মম বিধানের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয় | The Kerala Story Movie Review

লেখক নারায়ন দেবনাথ: কেরলের হিন্দু ও খ্রিস্টান মেয়েদের লাভ জিহাদের নামে  ধর্মান্তরিত করে একটি ধর্মীয় বিধান কতটুকু নির্মম হতে পারে এই ছবিটি না দেখলে তা অনুধাবন করা যাবেনা।

৩২ হাজার হিন্দু ও খ্রিস্টান মেয়ে কেরালাতে লাভ জিহাদের স্বীকার হয়ে তাদেরকে জিহাদি যোদ্ধা হিসাবে আইসিস এ যোগদান করতে বাধ্য করা হয়েছিল।

এই ছবিতে ৩টি মেয়ের জীবনে ঘটে যাওয়া নৃশংস ঘটনার কথা চিত্রায়িত করা হয়েছে।এই ৩ জনের মধ্যে একজন এখনো আফগানিস্তানের জেলে বন্দি।অপর জন আত্মহত্যা করেছে আর তৃতীয় জন এখনো গা ডাকা দিয়ে পালিয়ে বাড়াচ্ছে।যাকে ক্রমাগত ধর্ষন করা হয়েছে।

এই ঘটনাটি ভারতের এমন একটি রাজ্যে সংঘটিত হয়েছে যেখানে দেশভাগের আগে থেকেই সেখানে বিধর্মীদের উপর চলেছে নিষ্ঠুর অত্যাচার ইতিহাস তার সাক্ষী। 

১৯১৪ সালে গান্ধী দ:আফ্রিকা থেকে ফিরে এসে বলেছিলেন মুসলমানদের স্বার্থে হিন্দুদের চরম ত্যাগ স্বীকার করতে হবে তবেই নাকি ভারত স্বাধীন হবে।ফলশ্রুতিতে কেরালার মালাবার অঞ্চলের মুসলমানরা একদিনে ২০হাজার হিন্দুকে ধর্মান্তরিত এবং ১৫০০ হিন্দুকে হত্যা করেছিল।হাজার হাজার নারী অপহৃত ধর্ষিত এবং সর্বস্ব হারিয়ে গৃহহীন হয়েছিল ১লাখ হিন্দু।তারপরই শুরু হয়েছিল ভারতব্যাপী দাঙ্গা।ক্যালকাটা কিলিং নোয়াখালীতে হিন্দুদের রক্তে প্লাবন বয়ে আদায় করে নিয়েছিল পাকিস্তান।

হিন্দুদের এই আত্মত্যাগের ইতিহাস হিন্দুরা ভুলে গিয়েছে যারজন্য যুগেযুগে ভারতে সৃষ্টি হয়েছে কেরল,কাশ্মীর ও প:বঙ্গ।

ইসলামে বিধান রয়েছে বিধর্মীদের বিরুদ্ধে ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষে যে কোন ধরনের নির্যাতন নিপীড়ন হত্যা নৃশংসতা ইসলাম সমর্থন করে।এ নিয়ে গ্রন্থে প্রচুর আয়াত রয়েছে।

এখন মনে হতে পারে প্রায় ১৪শ বছর পূর্বে ৭ম শতাব্দীতে বিশেষ ধর্মীয় সামাজিক পরিস্থিতিতে জাহাদের প্রয়োজন ছিল।কিন্তু এখন সভ্যতার বিবর্তনে তা এখন অপ্রাসঙ্গিক।কিন্তু গ্রন্থে সেভাবে কিছু উল্লেখ নেই।ফলে মুসলমানরা বিশ্বাস করে আল্লাহর অমোঘ বিধান অমুসলমানকে ইসলামে দীক্ষিত করে বিশ্বব্যাপী ইসলামের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে।একমাত্র বল প্রয়োগ বা যুদ্ধের মাধ্যমেই তা সম্ভব।যেহেতু ধর্মের জন্য ধর্মের নির্দেশে এই যুদ্ধ  তাই এই যুদ্ধ পবিত্র ধর্মযুদ্ধ বা জেহাদ।ইসলামে জেহাদ অবিচ্ছেদ্য ও অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।তাই এই জেহাদেরই আরেকরূপ কেরল স্টোরি। 

কেরল দেশভাগের পর থেকে কংগ্রেস এবং কমিউনিস্টরা শাসন করে আসছে।এই দুটি রাজনৈতিক শক্তি ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে ভারতকে কোথায় নিয়ে যেতে চায় তা কেরল স্টোরি সিনেমা তার একটি দৃষ্টান্ত।রাজ্যটি ইসলামের এই বিধানের প্রতি এতটাই সহানুভূতিশীল যে ৩২ হাজার ভিন্ন ধর্মের মেয়েরা উদাও হয়ে গেল প্রশাসন নীরব।অথচ এই ৩২ হাজার মেয়ের ঠিকানা কেরলের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত।কেরলের মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর অজুহাতে ছবিটি নিষিদ্ধ করতে।কংগ্রেস সাংসদ শশীথারুর ছবিটি প্রচারণা ও প্রোপাগাণ্ডামূলক ছবি বলে চালাতে চেয়েছিলেন।ছবিটি নিষিদ্ধ করার জন্য তারা সুপ্রিমকোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিলেন।কিন্তু সুপ্রিমকোর্ট বলেছে এভাবে একটি ছবিকে নিষিদ্ধ করা যায়না।নির্দিষ্টভাবে কোথায় কি ত্রুটি রয়েছে বলতে হবে তারপর আমরা তা পর্যালোচনা করে দেখব।

শেষ পর্যন্ত ছবিটি গত ৫ই মে রিলিজ হয়েছে হিন্দি,মালয়ালাম,তামিল এবং তেলেগু ভাষায়। 

হিন্দু বাঙালি হিসাবে এই ছবিটি প্রতিটি পরিবারের উচিত তাদের মেয়েদের নিয়ে দেখা।কারণ শুধু কেরল নয় প:বঙ্গেও এমন অনেক ঘটনা লুকিয়ে রয়েছে যা একদিন কাশ্মীর ফাইলস বা কেরল স্টোরির মতো বেঙ্গল স্টোরি হিসাবে আমাদের সামনে উঠে আসবে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url