সংখ্যালঘুদের বাংলাদেশে থাকতে হলে সংখ্যাগুরুদের তোষন করতেই হবে
অনিমেষ হাজং যেমন বুঝতে পেরেছেন টিকে থাকার জন্য তাকে বাঙালি তকমাটা লাগাতে হবে, তেমনি বহু সনাতন ধর্মালম্বীও বুঝতে পেরে গেছেন বাঁচতে হলে হয় দেশ ছেড়ে পালাতে হবে নয়তো এদেশের সংখ্যাগুরুর ইমোশনকে কাজে লাগাতে হবে।
দেখবেন, আপনার কোনো সনাতনী বন্ধুকে যদি কোরবানির ঈদে আপনার বাসায় দাওয়াত দেন, আপনি হয়তো তার জন্য গোমাংস ছাড়া বিকল্প ম্যেনু রেখেছেন - কিন্তু ঠিক খাওয়ার সময় যদি বন্ধুটি বলে বসেন- " খাওয়ায় আমার কোন বাছবিচার নেই, নরমের মধ্যে গু আর শক্তের মধ্যে লোহা ছাড়া আমি সব খাই ", তখন তার একথা শুনে বন্ধুটিকে আপনার এক চামচ বেশি ভালোবাসতে ইচ্ছে হবে না!?
দিল পার হাত রাখ্কে কাঁহিয়ে? এতবড় অসাম্প্রদায়িক বাঙালি মুসলমান এখনো কোনো মায়ের পেটের গর্ভ থেকে বের হয়নি।
এই যে আপনি বন্ধুটির এই কথায় স্বস্তি পেলেন কিংবা স্বস্তি পাবেন- এটা ঐ সনাতন ধর্মালম্বী বন্ধুটি আগে থেকেই জানে।
সেদিন কে যেন পোস্টে লিখলেন কোনো এক পরিস্থিতিতে তিনি তাঁর হাতের শাঁখা খুলে রেখেছিলেন গণসংযোগে সুবিধা হয় বলে। তাঁর পোস্টে সকলে বাহবা দিলেন, কেউ তাঁর শাঁখা খুলে রাখার বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেন না, কেউ বললেন না এই ঘটনা এদেশের একজন সংখ্যাগুরুর লজ্জা।
সংখ্যালঘু কবিরা জানে তার কবিতায় অপ্রয়োজনীয় আরবী শব্দ ব্যবহার করলে সেই কবিতা পড়ে অনেকে খুশি হন, সংখ্যালঘু ওয়ার্ড কমিশনার জানে লাইভে এসে হাজারবার সালাম দিলে ভোট বেশি পাওয়া যাবে, সংখ্যালঘু সাংবাদিক জানেন আড়ালে ধর্মত্যাগ করে মুসলমান হলে রাষ্ট্রের নেক নজরে থাকা যাবে, তুমুল তুখোড় তরুণ বাম রাজনৈতিক নেতা যৌবনেই বুঝে গিয়েছিলেন এদেশে ব্যবসা ও রাজনীতির মাঠে গোল দিতে হলে হিন্দুয়ানী পরিচয় মুছে নিতে হবে। আপনি হয়তো এদের চিনতে পারছেন না। পারছেন না কারণ এরা দুটো পরিচয়ই প্যারালাল ম্যান্টেইন করেন, টিকে থাকার জন্য, দেশ থেকে পালানোর দূর্বিসহ অভিজ্ঞতা এড়ানোর জন্য, ওপরে ওঠার জন্য।
অনিমেষ হাজংকে আপনি যতই হাজং বানিয়ে রাখতে চান, পারবেন না। তবে এরা মুখে বলবে আমি বাঙালি হাজং, কিন্তু জানেন আপনার আমার ভাইদের হাতে যখন পাহাড়ি নারী ধর্ষিত হয় - অনিমেষ হাজংরা ঠিকই আমাকে আপনাকে "মগদা বাঙালি" বলে গালি দেয়, আড়ালে, ভয়ে, সন্তপর্ণে। ঠিক ঐ মুসলমান হয়ে যাওয়া তরুণটির মত, যে ভাবে সে সবকিছু হারিয়েও আজও সংখ্যালঘুই রয়ে গেলো।